Total Pageviews

Tuesday, 5 March 2019

এবার চিন্তনের কেন্দ্র নবদ্বীপ


View it @goo.gl/Rgi92N
(একটি ভবিষ্যৎত বই-এর খসড়া)

একটা কথায় আমি বড্ডো বিমূঢ় করে—নবদ্বীপ নাকি বাংলার অক্সফোর্ড! আমার পালটা প্রশ্নঃ অক্সফোর্ড কেন বিলেতের নবদ্বীপ নয়? কিন্তু, এ প্রশ্ন আমি কাকে করবো? হনুকরণপ্রিয় বাঙালিদের? যারা এখনো কোলকেতাকে বিলেত বানানোর জন্য বিগবেন ঘড়ি আর লন্ডন আই-এর নকলি তৈরি করতে চায় আর হুগলি নদীকে টেমস! মনে রাখবেন, ন্যায়কল্যানমিত্র বিমলকৃষ্ণ মতিলাল সাহেবদের নবদ্বীপের নব্যন্যায় শিখিয়েছেন বিলেতে বসেই। 
কানা রঘুনাথ এক বিশেষ কারণে পণ করেছিলেন, এবার থেকে আর কেউ নব্যন্যায় পড়তে মিথিলা বা অন্য কোথাও যাবে না। এবার কেন্দ্র নবদ্বীপ। এই দার্ঢ্য কিন্তু আমরা এখন হারিয়ে ফেলেছি। পাড়ার পাশের টোল-দরগা সম্বন্ধে জানিনা, কিন্তু বিলেত-আমেরিকা গিয়ে আমরা দেশের হাঁড়ির খবর জানিয়ে আসি। বিলেত বা সাম চাচার দেশে না গেলে তো গেঁয়ো যোগীর ভিখ পায় না। মোদ্দা কথা আমরা যেটা ভুলে গেছি,
"... আমি তার মুখের কথা শুনব ব’লে গেলাম কোথা,
শোনা হল না, হল না–
আজ ফিরে এসে নিজের দেশে এই-যে শুনি
শুনি তাহার বাণী আপন গানে॥
কে তোরা খুঁজিস তারে কাঙাল বেশে দ্বারে দ্বারে,
দেখা মেলে না, মেলে না–..."
কবীরকেও মনে পড়ে তো! 
मोको कहाँ ढूंढें बन्दे,
मैं तो तेरे पास में
... खोजी होए तुरत मिल जाऊं एक पल की ही तलाश में
कहे कबीर सुनो भाई साधो, मैं तो हूँ शवास में
অথবা লালনঃ
কাশী কি মক্কায় যাবি রে মন, চল রে যাই।
দোটানাতে ঘুরলে পথে সন্ধ্যে বেলায় উপায় নাই।।
         মক্কাতে ধাক্কা খেয়ে 
         যেতে চাও কাশী স্থানে
         এমনি জালে কাল কাটালে
                  ঠিক না মানে কোথা ভাই।।
...
         লালন বলে, সন্ধি জেনে
                  না পেলে জল নদীর ঠাঁই।।
তবুও অন্নদাশংকর রায়ের কথা মোতাবেক যেটা মনে রাখি, “স্বদেশের থেকে স্বকাল বড়ো”। এই এঁদো গলিতে বসেই তাই হিমেনেথের কথাটা মনে মনে জপি, “শিকড়ের ডানা হোক, ডানার শিকড়”! তাই বন্ধুবান্ধব, ছাত্রছাত্রীদের কই, “তুমি কোথায় আছো, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তুমি শত বাধাবিপত্তি স্বত্ত্বেও কি করছো সেটা আমার কাছে খুব দরকারি।” 
এবার লেখাপত্তর নিয়ে কথা কই। লেখার নীলরাঙা শিরোনামে ডেস্কটপের মাউস ক্লিক করলে বা  মোবাইল ফোনে আঙুলের ছোঁয়া দিলেই লেখাগুলো খুলে যাবে।



বৈঠকি আমেজে রঘুনাথ শিরোমণিকে নিয়ে আলোচনা—বলা যেতে পারে, এ হল গিয়ে রঘুনাথের সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয়। এই জানান-দেওয়া নিবন্ধে আমি অবশ্যি দুটো বিষয়ে কথা কয়েছিঃ অ) চমস্কির বাক্যতত্ত্বে ফাঁকা ঠাঁই আর “অভাব” পদার্থ (পরের প্রবন্ধগুলোতে এর বিস্তার পাবেন) ; আ) নেতির নেতি (double negation) আর বাংলার না নিয়ে কিছু কথা। 
(এই নিবন্ধটি লেখার সময় হাতের কাছে দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য্যেরবঙ্গে নব্যন্যায়চর্চা  কিতাবটি হাতের কাছে ছিলো না। অনেক নবীন তথ্য যোগ হবে তাহলে)                

“স্বত্ব নিয়ে সমস্যার নিবেদন” (On my-ness and economic entitlement)

রঘুনাথ “স্বত্ব” নামের পদার্থ নিয়ে এক আশ্চর্যজনক সমস্যার সূত্রপাত করেছেন। এই “স্বত্ব” নিয়ে কথা কইতে গিয়ে, রঘুনাথের কথাবার্তার সূত্রে আমি মালিকানার সমস্যার কথা কয়েছি মার্ক্স আর অমর্ত্য সেনের হাত ধরে।
এই নিবন্ধ আগের নিবন্ধেরই ইঙ্গ-রূপান্তর হলেও, বিস্তার করেছি অনেকটা—বিশেষত ভাষার মালিকানা আর ভাষিক অধিকারকে সামনে রেখে। আগের বাংলা নিবন্ধে জোর ছিল কেবল জমির মালিকানার ওপর।  

সম্প্রদান- ব্যাকরণ--রাজনীতি--অর্থনীতি (Political Economy of Sampradana Karaka)

দানের রাজনীতি নিয়ে কথা কৈতে গিয়ে আবার এসে গেছে স্বত্বের কথা। সম্প্রদান কারকের মতো বর্গকে বুঝতে গিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে সাহেবি তত্ত্বের পাশাপাশি নবদ্বীপীয় নব্যন্যায়ের তকনিকি কারিকুরি।

"আর 'হরিনামামৃত ব্যাকরণ' পড়া হয়ে উঠলো না" (On Harinamamrita Vyakarana)

শ্রীজীব গোস্বামীর “হরিনামামৃত ব্যাকরণ” কিতাবটা আমি পেয়েছিলুম নবদ্বীপের পাকাটোল লেনের গোপাল চতুস্পাঠী থেকে। ব্যাকরণ পড়ার অছিলায় হরিনাম সংকীর্তন করাই মোদ্দা উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু, পড়তে গিয়ে আমি হতবাক। এযে দেখি দার্শনিক প্রতর্কে ভরপুর চমৎকার এন্টি-গ্রামার! আকরণ আর অনাকরণ মিলেমিশে একাকার। এই নিবন্ধটাকে আরো বিস্তারিত করার ইচ্ছে আছে,


“অভাব” বলে এক পদার্থের কথা আছে ন্যায়-বৈশেষিক দর্শনে। কানা রঘুনাথ সেই বর্গীকরণকে ছানবিন করে পেশ করলেন নবীন তত্ত্ব। এই “অভাব”-কে নিয়েই চমস্কির বাক্যতত্ত্বের একটা বিশেষ ধারনাকে বুঝতে চাইলুমঃ Empty Category Principle(ECP)—বাক্যের মধ্যে ফাঁকা বা উড়ে যাওয়া ঠাঁই।  বাক্যের মানে বুঝতে চমস্কির Logical Form (LF) কাফি নয়, তাই অভাবের তত্ত্ব দিয়ে ওই Silenceme (আমার তৈরি করা একটা পরিভাষা)-কে বুঝে নিতে চাইলুম।   

Review Of the Book: "Sounds Of Silence"

এই Sounds Of Silence বইতে কয়েকজন সাহেবসুবো বিভিন্ন ভাষায় ECP-র প্রয়োগ দেখিয়েছেন, কিন্তু তাঁরা একাধিক চমস্কীয় মডেলে আশ্রয় নেওয়ায় commensurability বা সাধারণ গুণনীয়ক গেছে হারিয়ে। এই কিতাবের সমালোচনায় আমি আবার টেনে আনলুম অভাবের প্রসঙ্গ--।    

আখ্যাতবাদ: ক্রিয়া আর বিভক্তির মানেতত্ত্ব 

রঘুনাথের এই পুঁথিটা নিয়ে এখনো অব্দি কিছু লিখিনি। একটা সময় বাংলা যৌগিক ক্রিয়া (দ্রঃ বাংলা ক্রিয়ার যোজ্যতা ও যৌগিক ক্রিয়ার সমস্যা”) নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এই পুঁথির সন্ধান পাই। অধ্যাপক প্রবাল সেন ইঙ্গভাষায় তর্জমা করেছেন। পুঁথিটা মুলত ক্রিয়া আর তার বিভক্তি নিয়ে। এই ক্রিয়া-বিভক্তিই, খুব সহজ করে কইতে গেলে, রঘুনাথের পরিভাষায় “আখ্যাত”। সংস্কৃত ভাষায় সেসময় ( খ্রিঃ পঞ্চদশ শতক) যে বদলগুলো আসছিলো, যেমন ক্রিয়াপদ ভেঙে সংযুক্ত ক্রিয়ার আবির্ভাব (“পচতি”-র বদলে “পাকম্ করোতি”-- হরিনামামৃত ব্যাকরণ-এ এমন নমুনা শ্রীজীব দিয়েছেন), তা’ নিয়ে যে আলোচনা করেছেন রঘুনাথ এবং নৈয়ায়িক ও বৈয়াকরণিক পূর্বপক্ষ খণ্ডন করেছেন অসম্ভব পারঙ্গমতায়! ক্রিয়ার স্বলক্ষণ নির্দেশ করতে গিয়ে কৃৎপ্রত্যয় আর বিভক্তির মানেগত ভূমিকা দর্শেছেন একই সঙ্গে।    

প্রশ্ন হল গিয়ে এইসব তত্ত্বীয় কচকচি মানুষ আর না-মানুষের আত্যন্তিক দুঃখের নিদান দিতে পারবে তো???

সুকুমার রায়কে মনে করি, “মনবসনের ময়লা ধুতে তত্ত্বকথা সাবান (কিন্তু সাবান মেলে না)” !!!